October 1, 2012

র‍্যান্ডম একদিন

আমার বোন/ধু "চি" মাসছয়েক আমাদের কাছে ছিল, গত বছর। 

এমনিতে ও প্যাঁচা প্যাটার্ন, রাত্রে জেগে থাকে দিনে ঘুমোয়। কাজেই, আমরা যখন আপিস কাছারি শেষ করে রাম-টায়ার্ড অবস্থায়ে টিভির সামনে জিরোতে বসি, তখন ওর রাজ্যের এনার্জিতে ফুটকড়াই অবস্থা। এই আলু-ফুলকপি রান্না করে ফেলছে, এই চেলো কাবাব বানাচ্ছে, এই গাদা কাপড় ধুয়ে শুকিয়ে মায় ভাঁজ পর্যন্ত করে ফেলছে - অভ্যেস এমন খারাপ করে দিল যে ও ফিরে যাওয়ার পর ওই ভাঁজ করা কাপড়ের লোভে বাড়ির সামনে কিউবান ধোপাকে কাপড় দেওয়া শুরু করলাম - যদিও তার নাম জাফর। আর রান্নাঘরে মশলার তাকে এলাচ-লবঙ্গ-দারচিনি-লঙ্কা-হলুদ-তেজপাতা-জিরে ছাড়া যে এক গন্ডা কৌটো আছে, সেগুলো আমি চিনিও না, ব্যবহারও করি না।

সে যাক গে। এমনি একদিন, খুব বৃষ্টি পড়ছে। 

বৃষ্টি পড়লে মনটা যুগপৎ ভালও হয়, খারাপও হয়। সেই দোলাচলে মুড়ি পেঁয়াজি চা ব্যাপারটা জমবে ভালো। এদিকে সূর্য আজ ওঠেনি বলেই বোধহয় - ডাক্তারবাবু সন্ধ্যের মুখে বাড়ি চলে এসেছেন। পেঁয়াজ ব্যাসন লঙ্কা নুন গুলে, চা বানিয়ে, "চি" কে ডাকতে গেলাম। 

আমি - উঠে পড় উঠে পড়, সন্ধ্যে হয়ে গেছে।
"চি"  সোফাতে ঘুমন্ত।
আমি - কিরে, উঠবি না?
"চি" তাও ঘুমন্ত।
আমি মৃদু ঠেলা দিয়ে - এই, ওঠ!
"চি" মাছি মারার মতো করে আমার হাতে এক চাপড়
আমি - আহ! মারছিস কেন? 
"চি" ঘুমন্ত অবস্থায় - মজা 
আমি - মজা? বার করছি তোর মজা (কাতুকুতু দেওন)
"চি" - উঁ উঁ ...বলছি আমি কাজটা শেষ করেই আসছি 
আমি - এখনি ওঠ, এক্ষুনি 
"চি" - বাড়ি চলে গেছে
আমি - কেউ বাড়ি যায় নি, পেঁয়াজি বানাচ্ছি খাবি চল 
("চি" হাঁ করে অপেক্ষা করন )
আমি - এখানে দেব না, খাবার টেবিলে চল 
"চি" পাশ ফিরে - আচ্ছা, কাল যাব।

সোজা আঙ্গুলে ঘি উঠবে না দেখে, ঘরের সব আলো জ্বেলে জোরসে এক ঠেলা মারলাম - আধখানা লাল চোখ খুলে গেল - সকাল হয়ে গেছে?
আমি ঘটঘট করে জানলা বন্ধ করতে করতে - সকাল সেই সকালে হয়েছিল, এখন বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যে হয়ে গেছে, আর তুই আমাকে মেরেছিস।
"চি" ভোম্বল অবস্থায় - মেরেছি? কেন? 
আমি ভিকটিম মুখে - কেন আমি কি জানি? আমি তোকে পেঁয়াজি খেতে ডাকতে এলাম ..." 
"চি" করুণমুখে - ইস সরি সরি। ঘুমের মধ্যে আমি বুঝতেই পারি না ..." 

এর পর আমায় পেঁয়াজিও ভাজতে হলো না, চাও করতে হলো না। রাত্রে উত্কৃষ্ট খিচুড়ি রান্না হলো, সাথে ডিমভাজা আর পাঁপড়।

এখন বৃষ্টি পড়লে ম্যাগি বানাই আর ডাক্তারবাবু হা-হুতাশ করেন।

(জুলাই, ২০১১)

এতদ্দ্বারা "চি" কে সত্বর ফিরিয়া আসিতে অনুরোধ করা হইতেছে 

4 comments:

  1. শুনিয়াছি, হস্তপদ সঞ্চারণপূর্বক তাই-চি অভ্যাস করিলে নাকি শরীরে "চি" প্রত্যাবর্তন করে। বাড়িতে চি-র প্রত্যাগমন ঘটাইতে সেই রকম কোন প্রক্রিয়ার সন্ধান নাই?

    ReplyDelete
  2. Tumhari zindagi mein Chi hua? Hua?

    এতদ্দ্বারা "চি"কে এখানেও সত্বর আসিতে অনুরোধ করা হইতেছে।

    ReplyDelete
  3. তাই-চি করিয়া কোন প্রকার ফললাভ করি নাই। অন্য উপায় অর্থাৎ উৎকোচের কথা ভাবিতেছি।

    চিহুয়াহুয়া বহুত খতরনাক কুকুর হচ্ছেন। দেখলেই কামড়াচ্ছেন।

    ReplyDelete
  4. "চি" ল "চি" ত্কার করে "চি" কে ডাক

    ReplyDelete

Leave a comment